কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির তাণ্ডব: সাম্পান মাঝির ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে ধান-ফসল খেয়ে সাবাড়

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ায় আবারও বন্য হাতির তাণ্ডব! রবিবার (২৫ মে) রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে একটি ক্ষুধার্ত হাতি হামলা চালায় ওই এলাকার সাম্পান মাঝি মোঃ আবু তাহেরের বাড়িতে। এতে তার ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, গোলার ধানচাল ও আশপাশের মাঠের ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবু তাহেরের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, “হাতি পেছনের দিক দিয়ে এসে দরজা-জানালা ভেঙে ঘরে ঢোকে, সব কিছু গুঁড়িয়ে দিয়ে সামনের দিকে বের হয়ে যায়। এখন আমাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই, আমরা কোথায় যাব? সামনেই কোরবানির ঈদ, আতিথেয়তা কিভাবে করব?”
তাদের ছেলে, চিৎমরম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ওসমান গনি জানান, “আমার অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা সামনে। বাবা সাম্পান চালিয়ে সংসার চালাতেন, এখন ঘরই নেই। সব শেষ হয়ে গেল।”
চিৎমরম ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, "আবু তাহেরের পরিবার প্রাণে বেঁচে গেলেও ঘরবাড়ির কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ দুই লাখ টাকার বেশি। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।”
ঘটনার পর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাঙ্গামাটি দক্ষিণ বন বিভাগের কর্ণফুলী সদর সহকারী বন সংরক্ষক আবু কাউসার বাপ্পি। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিবেদন তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে বনবিভাগ থেকে সহায়তা দেয়া হবে।”
এদিকে, কাপ্তাইয়ের ব্যাঙছড়ি, ডংনালা, রাইখালী, চিৎমরমসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি বন্যহাতির আক্রমণ বেড়েছে। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর সীতার ঘাট মন্দির ও ২১ অক্টোবর কাপ্তাই পুলিশ সার্কেল অফিসেও হাতির হামলায় ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বনাঞ্চলে খাদ্য সংকট তৈরি হওয়ায় বন্যহাতির পাল লোকালয়ে এসে তাণ্ডব চালাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।
What's Your Reaction?






