লামায় ৯ কৃষি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে, প্রবাসীর দখলচেষ্টায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি

বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ডলুছড়ি মৌজার পুইট্টা ঝিরিপাড়ায় দীর্ঘ চার দশক ধরে বসবাসকারী ৯টি কৃষি পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, দুবাই প্রবাসী মঞ্জুর আলম নামের এক ব্যক্তি স্থানীয় ভূমিদস্যুদের সহায়তায় এই পরিবারগুলোকে তাদের স্বত্ব-দখলীয় খাস জমি থেকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দায়ের করে হয়রানির পাশাপাশি মব জাস্টিসের পরিস্থিতিও সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ একর খাস জায়গায় ১৯৮০ দশক থেকে এই পরিবারগুলো বসবাস করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা অনুযায়ী, এসব ভূমি সরকারের মালিকানাধীন খাস তৌজি হলেও দীর্ঘকাল ধরে বসবাসকারী ভূমিহীন প্রজারা এর প্রকৃত ভোগদখলকারী এবং সরকারি বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের নামে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বন্দোবস্তের আবেদন জমা রয়েছে এবং মৌজা হেডম্যানের সুপারিশপত্রও রয়েছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা ও দুবাই প্রবাসী মঞ্জুর আলম স্থানীয় মিন্টুর ছেলে নাজমুলের সহায়তায় জাল কাগজপত্র, নোটারি চুক্তিনামা এবং তফসিলবিহীন কাগজ দেখিয়ে জায়গার মালিকানা দাবি করছেন। এমনকি জমির সুনির্দিষ্ট জমাবন্দি (রেকর্ড) ছাড়াই বেসরকারি সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জোরপূর্বক পরিমাপের চেষ্টা চালানো হয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) স্থানীয় তিন সাংবাদিক সরেজমিন গিয়ে পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের সত্যতা পান।
স্থানীয়রা জানান, এ পর্যন্ত মঞ্জুর আলমের দায়ের করা দুটি মামলায় তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি, ভয়ভীতি, এবং প্রশাসনিক হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।
সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, যে সব জমির কাগজপত্রের ভিত্তিতে মঞ্জুর আলম জমির মালিকানা দাবি করছেন, সেগুলোর বেশ কিছু অংশ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও মোস্তফা গ্রুপের নামে নামজারি হয়ে গেছে। এর পরও মঞ্জুর আলমের লোকজন জমাবন্দি উপস্থাপন না করে পরিমাপের নামে দখলবাজির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও ভোগদখল বজায় রাখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ৯টি পরিবারের ৩৯ জন সদস্য। তাঁরা দ্রুত প্রকৃত ভূমির মালিক নির্ধারণ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দখলচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






