ফরিদপুরের মধুখালীতে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে মোবাইল ব্যাংকিং চক্রের মূলহোতা আটক

ফরিদপুর সেনা ক্যাম্প ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত সফল অভিযানে দেশের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
সেনা সূত্র জানায়, ফরিদপুর সেনা ক্যাম্পে সম্প্রতি একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে— যেখানে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভুয়া কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সেজে প্রতারণার বিষয়টি উঠে আসে। তদন্তে জানা যায়, গ্রাহকদের একাউন্ট, পিন ও ওটিপি সংগ্রহ করে চক্রটি অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করত।
গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব অর্থের চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল মধুখালী উপজেলার ডোমাইন ইউনিয়নের একটি নির্দিষ্ট এলাকা। ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে তিনদিনব্যাপী চলা তদন্তে উঠে আসে, প্রতারিত অর্থ অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে ঢুকিয়ে বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে জয়ের নামে অর্থ সংগ্রহ করে তা বিদেশে পাচার করা হতো।
১৪ জুলাই ভোরে যৌথবাহিনীর সাত ঘণ্টার অভিযানে মধুখালী ডোমাইন বাজার এলাকা থেকে চক্রের মূলহোতা মো. কামরুল মিয়া (৪০) ও তার সহযোগী অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২) ও শেখ শাকিল আহমেদ (২৬) কে আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে ১০৬ পিস ইয়াবা, ৪২টি গ্রামীণফোন সিম ও ১০টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রতারণা, অর্থ পাচার ও জুয়ার অর্থ ব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করেছে।
জানা যায়, অবৈধ সিম সংগ্রহ করে নতুন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খোলা এবং তা ব্যবহার করে তারা প্রতারণা চালাত। দেশের প্রায় সব বিভাগেই তাদের সক্রিয়তা ছিল।
আটকদের মধুখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, সাইবার অপরাধ দমন আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
সেনা সূত্র আরও জানায়, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও ডিজিটাল লেনদেন রক্ষায় সেনাবাহিনী জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে এবং এ ধরনের অপরাধ দমনে জনগণের সহায়তা কামনা করেছে।
What's Your Reaction?






