কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি দিল অন্তর্বর্তী সরকার

আলী আকবর শুভ, কুবি প্রতিনিধি, কুমিল্লাঃ
Jul 12, 2025 - 08:37
 0  1
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি দিল অন্তর্বর্তী সরকার

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাহসী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই দিনটিকে ‘জুলাই আন্দোলনের প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে কুবির মুক্তমঞ্চে ‘গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার প্রথম প্রতিরোধ দিবস-১১ জুলাই’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। প্রধান অতিথি হিসেবে আসিফ মাহমুদ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন।

অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য মাসুদা কামাল আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “এই যুদ্ধে আমাদের সন্তান আব্দুল কাইয়ুম প্রাণ দিয়েছে, অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের একটাই দাবি—১১ জুলাই যেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়।” তিনি উপদেষ্টার প্রতি আবেদন জানান, যেন তিনি শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দেন।

উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, “জুলাই আন্দোলনে আহত হওয়া কুবির ১১ শিক্ষার্থী এখনো ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। আমি উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসা হয়।” তিনি আরও জানান, আন্দোলন দমনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের অংশগ্রহণকারীদের তথ্য সংগ্রহে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অভিযোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

আসিফ মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, “১১ জুলাই-ই ছিল সেই দিন, যেদিন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের হামলার খবর সেদিন শাহবাগের আন্দোলনে আগুন ছড়িয়ে দেয়। সেই দিন কুবির শিক্ষার্থীরা যেভাবে অবরোধ সফল করে, সেটাই প্রথম প্রতিরোধের নাম পায়।”

তিনি আরও জানান, কুমিল্লা-ঢাকা মহাসড়কের যেই স্থানে শিক্ষার্থীরা অবরোধ ও বিজয় অর্জন করেছিলেন, সেখানে ‘প্রতিরোধ মিনার’ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সংকট নিরসনে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে তিনটি বাস উপহার দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

বিশেষ এই দিনটি কেবল একটি ঘোষণা নয়, বরং একটি প্রজন্মের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে— এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow